বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোর রেজুলেশন অধ্যাদেশ চূড়ান্ত করতে পরামর্শ চেয়েছে- আইডিআরএ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বীমা খাতকে সুশাসন ও স্থিতিশীলতার আওতায় আনতে প্রণীত ‘বীমাকারী রেজুলেশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর পরিমার্জিত খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে জনমত আহ্বান করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) খসড়াটি সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়, যাতে করে সংশ্লিষ্ট অংশীজন, নীতিনির্ধারক, পেশাদার বিশেষজ্ঞ এবং সাধারণ জনগণ মতামত প্রদান করতে পারেন।

নতুন এই অধ্যাদেশের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বীমা গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণ, দাবি নিষ্পত্তিতে স্বচ্ছতা আনা এবং বীমা খাতে জনআস্থা ফিরিয়ে আনা। দীর্ঘদিন ধরে কিছু বীমা কোম্পানি গ্রাহকের ন্যায্য দাবির নিষ্পত্তি না করায়, খাতটিতে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে সেই সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

পরিমার্জিত খসড়ায় বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে (আইডিআরএ) সমস্যাগ্রস্ত বীমা কোম্পানি দেউলিয়া ঘোষণা করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। এমনকি প্রয়োজন হলে পরিচালকদের ব্যক্তিগত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে গ্রাহকের দাবি নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নেওয়ার বিধানও যুক্ত করা হয়েছে।

আইডিআরএ চাইলে বীমা কোম্পানির চেয়ারম্যান, পরিচালক, সিইও বা অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাকে অপসারণ অথবা প্রশাসক নিয়োগের মতো পদক্ষেপ নিতে পারবে। পাশাপাশি কোম্পানির মালিকানা হস্তান্তরের আগে ব্রিজ বীমাকারী প্রতিষ্ঠান গঠনেরও বাধ্যবাধকতা থাকবে।

বীমাকারীর রেজুলেশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর চূড়ান্ত খসড়া অনুসারে, বীমা কোম্পানির চেয়ারম্যান, পরিচালক, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা বা অন্য যেকোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে অপসারণ বা প্রতিস্থাপন করাসহ কোম্পানিতে প্রশাসক নিয়োগ বা অন্য যেকোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
তবে বীমা কোম্পানির মালিকানা তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রির আগে এক বা একাধিক ব্রিজ বীমাকারী প্রতিষ্ঠান গঠন করতে হবে। সাধারণভাবে যার মেয়াদ হবে দুই বছর। তবে মেয়াদ বাড়িয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর করা যাবে। প্রতিটি ব্রিজ বীমাকারী প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য একটি পর্ষদ, প্রধান নির্বাহী নিয়োগ করা হবে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ নিয়ে তহবিল গঠন করা হবে।

অধ্যাদেশটিতে বলা হয়েছে, বীমাকারীর মূলধন ঘাটতি, তারল্য সংকট, দেউলিয়াত্ব বা অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ অন্য যেকোনো ঝুঁকির সময়োপযোগী সমাধান, আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণ এবং উহার সহিত সম্পর্কিত বা আনুষঙ্গিক বিষয়ে বীমাকারীর রেজুলেশন সংক্রান্ত বিষয়ে বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়।

বীমাকারীর রেজুলেশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ এ ভূমিকা ছাড়াও ৭টি অধ্যায় রয়েছে। এসব অধ্যায়ে রেজুলেশনের কর্তৃত্ব, অস্থায়ী প্রশাসন, বীমা খাত ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কাউন্সিল, বীমাকারীর অবসায়ন, বীমাকারীর স্বেচ্ছায় অবসায়ন, বীমাকারীর সম্পদ বা তহবিলের অপব্যবহার এবং অপরাধ, দন্ড, জরিমানা ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *